মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: টেনশনে আছেন দেশবরেণ্য শিল্পী মানিকগঞ্জ-২ ( সিংগাইর-মানিকগঞ্জ সদরের একাংশ ও হরিরামপুর) আসনের এমপি মমতাজ বেগম। তার আসনের দিকে নজর পড়েছে জাতীয় পার্টির ও বিকল্পধারার যুক্তফ্রন্টের।
২০০৮ সালে জাতীয় পার্টির হয়ে জাপা প্রেসিডিয়াম সদস্য শিল্পপতি সৈয়দ মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান এই আসনে নির্বাচন করে বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী হারুন অর রশিদ খান মুন্নুর কন্যা জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতাকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে জয়ী হয়েছিলেন। তাই এবার এই আসনটিকে জাতীয় পার্টি টার্গেট করেছে।
এছাড়া মমতাজের আসনের দিকে কড়া নজর বিকল্পধারায় সদ্য যোগদানকারী জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও জাতীয় পার্টির আমলের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী গোলাম সারোয়ার মিলনের। তিনি অবশ্য ওয়ান ইলেভেনের সময় কোরেশী দলেও যোগ দিয়েছিলেন।
তিনি নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার ঠিক আগমুহূর্তে যুক্তফ্রন্টে যোগ দিয়েই এই আসনের জন্য দলীয় মনোনয়ন কিনেছেন।
রাজনৈতিক মহলে জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি এসএম আব্দুল মান্নান ও যুক্তফ্রন্টের প্রধান সমন্বয়ক গোলাম সারোয়ার মিলনকে নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে।
অনেকের ধারণা আওয়ামী লীগ যদি ঐক্যের কারণে এই আসনটি ছাড় দেন সেই ক্ষেত্রে জাতীয় পার্টি পেতে পারে। তবে আওয়ামী লীগ ঘরোয়ানা মমতাজ এমপির কাছের ঘনিষ্ঠজনদের অভিমত মমতাজ এই আসনটি গুছিয়ে এনেছেন। এছাড়া নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন।
সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ভিপি শহিদুর রহমান শহিদ যুগান্তরকে জানান, বর্তমান এমপি অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি উন্নয়ন করেছেন। তৃণমূলের সঙ্গে তার নেটওয়ার্ক। মমতাজের বিকল্প এই আসনে কেউ হতে পারে না। নারী সমাজে মমতাজের ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।
অপর দিকে জেলা জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য, জেলা সহসভাপতি ও হরিরামপুর উপজেলা জাপার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বিল্লাল হোসেনের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, তাদের এই সিটের ব্যাপারে ইতিমধ্যে গ্রিন সিগন্যাল পেয়ে গেছেন। তারা নির্বাচনী সব প্রক্রিয়ার দিকে জোর দিচ্ছেন। তৃণমূলপর্যায়েও তাদের নির্বাচনী কমিটি গঠন সম্পন্ন হয়েছে।
সূত্রমতে, মমতাজ বেগম প্রথমে ২০০৮ সালে প্রথমে সংরক্ষিত আসনে দ্বিতীয় বার ২০১৪ সালের নির্বাচনে তিনি এমপি হন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন কিনেছেন বর্তমান এমপি মমতাজ বেগমসহ ৭ জন।
বাকীরা হলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মহীউদ্দিন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাবেক ক্রীড়া ও যুববিষয়ক সম্পাদক সাবেক কৃতী ফুটবলার দেওয়ান সফিউল আরেফিন টুটুল, সাবেক এমপি সামসুদ্দিন আহম্মেদ, মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিল্পপতি ইঞ্জিনিয়ার সালাম চৌধুরী, হাটিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মনির, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা তারিকুল ইসলাম উইলটন।
এদিকে জাতীয় পার্টির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এই আসনটি জাপাকে ছেড়ে দিয়েছিল। তখন বিএনপির প্রার্থীর শক্তিশালী প্রার্থীকে জাপার এমপি প্রার্থী এসএম আব্দুল মান্নান বিপুল ভোটে পরাজিত করে এমপি নির্বাচিত হয়েছিল।
সেই আশায় এবারও জাপা এই আসনটিকে টার্গেট করেছে। জাপার নেতা কর্মীরা মনে প্রাণে বিশ্বাস করছেন, এবার ২০০৮ সালের মতোই আওয়ামী লীগ জাপাকে এই আসনটি ছেড়ে দেবে। এসএম আব্দুর মান্নান জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য। দলের কেন্দ্রীয় থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ে তার ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তিনি মানিকগঞ্জ জেলার জাতীয় পার্টির সভাপতি। একজন অন্যতম বিত্তশালীর কাতারেও তিনি। সংগঠক হিসেবে ইতিমধ্যে তার সুপরিচিতি ছড়িয়ে পড়েছে।